চুল পড়া বন্ধ করতে মেহেদি জবা ও আমলকীর রেসিপি
আপনি কি চুল পড়া নিয়ে চিন্তিত ? বিশেষ করে চুল মেয়েদের কাছে একটি
গুরুত্বপূর্ণ অংশ তাদের জীবনে।চুল পড়া বন্ধ করতে মেহেদি জবা ও আমলকীর
রেসিপি দারুন উপকার। প্রকৃতি আমাদের এমন কিছু উপাদান দিয়েছেন যেগুলো চুলের
যত্নে সত্যিই চমৎকার ভাবে কাজ করে- মেহেদি, জবা, আমলকী।
কেমিক্যাল উপাদান বাদ দিয়ে প্রাকৃতিক উপাদান মেহেদি, জবা, আমলকী দিয়ে চুলের
যত্ন কিভাবে নিবেন সেটির সম্পূর্ণ নিয়ম নিচে দেওয়া হল।চুল পড়া বন্ধ করতে
মেহেদি জবা ও আমলকীর রেসিপি গুরুত্ব নিচে বর্ণনা করা হলো।
পেজ সুচিপত্রঃ চুল পড়া বন্ধ করতে মেহেদি জবা ও আমলকী
- চুল পড়া বন্ধ করতে মেহেদি জবা ও আমলকীর রেসিপি
- চুলে অতিরিক্ত রুক্ষতা দূর করার উপায়
- চুল ঘন ও লম্বা করার উপায়
- ঘরোয়া নিয়মে চুলের যত্ন
- খুসকি দূর করতে মেহেদির উপকারিতা
- মাথা ঠাণ্ডা রাখতে মেহেদির কার্যকারিতা
- লাল জবার উপকারিতা
- চুলের আগা ফাটাই জবার উপকারিতা
- চুলের উজ্জ্বলতা বাড়াতে আমলকীর কার্যকারিতা
- মাথার তকে চুলকানি ও সংক্রমণ কমাতে আমলকীর ব্যাবহার
চুল পড়া বন্ধ করতে মেহেদি জবা ও আমলকী
চুল পড়া বন্ধ করতে মেহেদি জবা ও আমলকীর রেসিপি দারুন উপকারে আসতে পারে।
দৈনন্দিন জীবনে নানা ব্যস্ততার কারণে চুলের সঠিক যত্ন নিতে না পারাই চুলের
অনেক সমস্যা দেখা যায়, চুল রুক্ষ হয়ে যাওয়া, অতিরিক্ত চুল পড়া, চুল ভেজ্ঞে
যাওয়া ইত্যাদি। তবে ঘরে বসেই সপ্তাহে ২-৩ দিন প্রাকৃতিক তিনটি উপকরণ দিয়ে
আপনি আপনার চুলের যত্ন নিতে পারেন খুব সহজে।
চুল পড়া বন্ধ করতে মেহেদি,জবা, আমলকী- এই তিনটি প্রাকৃতিক উপাদান একসাথে
ব্যাবহারে দারুন উপকারিতা পাবেন। নিজেস্ব গুনাগুন থাকাই এই গুলো উপাদান
চুলের গোঁড়া শক্ত করে, নতুন চুল গজায় ও চুল পড়া বন্ধ করে। মেহেদি, জবা,
আমলকী নিয়মিত ব্যবহারে শুধু চুল পড়া বন্ধই হবে না বরং চুল হবে ঘন,
কাল, লম্বা, মজবুত ও স্বাস্থ্যজ্জল।
চুলে অতিরিক্ত রুক্ষতা দূর করার উপায়
চুল প্রতিটা নারীর কাছেই খুব শখের ও খুব মূল্যবান একটি বস্তু । আর এই চুল
যদি অতিরিক্ত রুক্ষ হয়ে যায় তাহলে সেটা দেখতে খুবই খারাপ লাগে এমনকি চুল
ভেজ্ঞে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। চুলের অতিরিক্ত রুক্ষতা দূর করতে চুলে
নিয়মিত পুষ্টি দিতে হবে, চুল পরিষ্কার রাখতে হবে ও প্রাকৃতিক ভাবে যত্ন
নিতে হবে।
ঘরে বসেই চুলের রুক্ষতা দূর করতে পারবেন খুব সহজেই। তবে চুলের যত্নের
পাশাপাশি কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।যেমন,অতিরিক্ত গরম পানি দিয়ে
চুল ধোয়া বন্ধ করুন এতে মাথার স্কেপের প্রাকৃতিক তেল শুকিয়ে চুল রুক্ষ
করে দেয়। গোসলের পর চুলে তায়ালে মোড়ানো যাবে না বা চুলে জোরে জোরে বাড়ি
দিয়ে মুছা যাবে না এতে চুলের কিউটিকল নষ্ট হয় যার ফলে চুল
রুক্ষ হয়ে যায়।
নারিকেল তেল চুরের জন্য খুবই উপকারী। এটি চুলের গোড়ায় গিয়ে চুলের আদ্রতা
বজায় রাখে এবং গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত চুলকে নরম করে। নারিকেল তেল সপ্তাহে
দুই থেকে তিনবার হালকা গরম করে ব্যবহার করলে চুলের রুক্ষতা দূর হয়।ডিম ও
অলিভ অয়েল একসাথে মিশিয়ে চুলের ব্যবহার করলে চুলের দক্ষতা দূর হয়। ডিমে
আছে প্রোটিন যা চুলকে পুষ্টি যোগায়। এছাড়াও অ্যালোভেরা চুলের জন্য খুব
উপকারী এটি নিয়মিত ব্যবহারে চুলের রুক্ষতা দূর হয় এবং খুশকি কমে
যায়।
চুল ঘন ও লম্বা করার উপায়
ঘন ও লম্বা চুল প্রতিটা মেয়ের স্বপ্ন। নিয়মিত যত্নে এবং সঠিক খাবার কিছু
প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে আপনি পেয়ে যাবেন ঘন ও লম্বা চুল। চুল ঘন ও
লম্বা করার কিছু কার্যকরী উপায় নিচে দেওয়া হল। পেঁয়াজের রস এতে আছে
সালফার যা চুলের গোড়া মজবুত করে পেঁয়াজের রস চুলের গোড়া সহ আগা
পর্যন্ত লাগিয়ে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন এরপর ধুয়ে ফেলুন সপ্তাহে ২ থেকে ৩
বার।
২ চামচ মেথি সারারাত ভিজিয়ে রাখুন সকালে পেস্ট বানিয়ে মেহেদির সঙ্গে
ব্যবহার করুন সপ্তাহে ১ থেকে ২ বার। এছাড়াও মেহেদি,জবা, আমলকি এ ৩ টি
উপকরণ চুলের জন্য খুব উপকারী।জবা ফুল ও পাতা চুল পড়া কমায় নতুন চুল
গজায় চুল নরম করে স্কেলপে রক্ত সঞ্চালন করে। মেহেদি চুলের গোড়া
মজবুত করে অতিরিক্ত তেল বা খুশকি দূর করে মাথার ত্বক ঠান্ডা করে ফলে চুল
পড়া কমে যায়।
আমলকি তো রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যা চুলের গোড়া শক্ত করে চুল
দ্রুত লম্বা করে চুলে দক্ষতা ও খুশকি দূর করে শুধু বাইরেই নয় খাবারেও কিছু
পরিবর্তন আনতে হবে যেমন পর্যাপ্ত পানি পান করা, পর্যাপ্ত ঘুম, পুষ্টিকর
খাবার খাওয়া অতিরিক্ত, ধূলাবালি এড়িয়ে চলা, কেমিক্যাল পণ্য থেকে দূরে
থাকা সবগুলো নিয়ম মেনে চললে চুল ঘন লম্বা ও স্বাস্থ্য উজ্জ্বল হয়ে
উঠবে।
ঘরোয়া নিয়মে চুলের যত্ন
চুল পড়া বন্ধ করতে মেহেদি জবা ও আমলকীর রেসিপি আপনি বাসায় বসে বানাতে
পারবেন। পার্লারে না গিয়ে ঘরোয়া পদ্ধতিতে চুলের অনেক যত্ন নেওয়া যায়।
তার মধ্যে অন্যতম নারিকেল তেলের মালিশ। নারিকেল তেল ব্যবহার করলে চুলের
গোড়া মজবুত করে খুশকি কমায় ও চুল ভাঙ্গা রোধ করে। তবে এটা নিয়ম মেনে
ব্যবহার করতে হবে কিছু নিয়ম আছে। যেমন নারিকেল তেল হালকা গরম করে নিয়ে
পাঁচ থেকে দশ মিনিট মাথায় মেসেজ করতে হবে ভালোভাবে এবং 30
মিনিট রেখে তারপর হালকা শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন।
এটি সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করতে পারেন। ডিম ও মধুর হেয়ার মাস্ক।
ডিম চুলের প্রোটিন যোগায় চুলের মসৃণতা বাড়ায়। একটা ডিম এক চামচ
মধু এক চামচ অলিভ অয়েল এক সঙ্গে মিশিয়ে চুলে লাগিয়ে 20 থেকে 30 মিনিট
রেখে শ্যাম্পু করুন।এটি সপ্তাহে একবার ব্যবহার করলে ভালো তবে আপনি দুইবার
ব্যবহার করতে পারেন এর অধিক নয়।
লেবু ও দই এর প্যাক। লেবুতে রয়েছে ভিটামিন সি খুশকি দূর করে চুলের
উজ্জ্বলতা বাড়ায়। ২ চামচ টক দই এর সাথে ১ চামচ লেবুর রস একসাথে মিশিয়ে
চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন এরপর
হালকা শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। মেথির পেস্ট, নতুন চুল গজাতে এবং
খুশকি কমাতে মেথির কার্যকারিতা অনেক। ২ চামচ মেথি পানিতে সারারাত
ভিজিয়ে রাখুন সকালে সেটাকে পেস্ট বানিয়ে চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত
লাগান,
৩০ থেকে ৪০ মিনিট রাখার পর ধুয়ে ফেলুন। প্রতিবার শ্যাম্পু করার পর হালকা
কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। চুল শুকানোর জন্য হেয়ার ড্রায়ার,চুলে
কালার করা, স্ট্রেইনার অতিরিক্ত ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন এগুলো চুলের অনেক
ক্ষতি করে।এছাড়াও কিছু খাদ্যাভাস রয়েছে যেগুলোর দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
যেমন, প্রোটিন আইরন অমেগা 3 ফ্যাটি অ্যাসিড (মাছ, বাদাম,ডিম,
শাকসবজি)এইগুলো চুলের জন্য খুব উপকারী এবং প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে
হবে।
খুসকি দূর করতে মেহেদির উপকারিতা
আপনি কি খুসকির মতো সমস্যায় ভুগছেন? সুন্দর চুল কে না চাই, তবে প্রকৃতি
থেকে পাওয়া কিছু উপাদান ব্যবহার করে আপনি এই সমস্যা গুলো থেকে মুক্তি পেতে
পারেন। অতিরিক্ত গরমে ঘামে,ফাঙ্গাস , ছত্রাক জনিত সমস্যার কারণে
খুসকি হয়ে থাকে।আর এই খুসকির জন্য চুল পড়া বেড়ে যায়। অস্বস্তিকর সমস্যার
একমাত্র সমাধান হলো মেহেদি।
মেহেদীতে রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও এন্টিফাঙ্গাল উপাদান। যা মাথায়
থাকা খুশকির জীবাণু ধ্বংস করে। মেহেদী মাথার ত্বক ঠান্ডা রাখে, খুশকি
হওয়ার প্রধান কারণ মাথার ত্বকে অতিরিক্ত তেল। মেহেদি অতিরিক্ত তেল শোষণ
করে যার ফলে খুসকি কমে যায়। মেহেদি মাথার ত্বকের মৃত চামড়া ও চুলের গোড়া
পরিষ্কার করে খুসকি দুর করতে সাহায্য করে।
দুই চামচ মেথি সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে সেই মেথি পেস্ট করে
মেহেদির সাথে ব্যবহার করুন। আপনার চুলের ধরন অনুযায়ী মেহেদী পাতার পেস্ট
ব্যবহার করুন। মেহেদির সাথে ৩-৪ চামচ টক দই মিশিয়ে চুলের গোড়া থেকে আগা
পর্যন্ত ভালো ভাবে লাগিয়ে ৪৫ মিনিট পর হালকা শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।এতে
চুল হবে নরম ও খুসকি মুক্ত। মেহেদির সাথে ২ চামচ লেবুর রস মিশিয়ে চুলে
লাগালে খুসকি দুর হয়।লেবুতে থাকা ভিটামিন-সি ফাঙ্গাস দুর করে ও মাথার
স্ক্যাল্প পরিষ্কার রাখে
মাথা ঠাণ্ডা রাখতে মেহেদির কার্যকারিতা
প্রাচীনকাল থেকেই মাথা ঠাণ্ডা রাখার কাজে মেহেদি ব্যাবহার হয়ে আসছে।
মেহেদিতে রয়েছে প্রাকৃতিক সব গুন যা মাথা ঠাণ্ডা রাখতে সাহায্য করে।
বর্তমান সময়ে মেয়েদের মাইগ্রেন অথবা মাথা ব্যথা এই সমস্যা গুল অনেক দেখা
যায়। মেহেদিকে বলা হয় শীতলতা যা মাইগ্রেনের মত ব্যথা সহ মাথা ব্যথা কমাতে
বিশেষ ভূমিকা রাখে।
মেহেদি অনেক গুন সম্পূর্ণ পাতা। যেটা রেগুলার ব্যাবহারে মাথার যেকোন
সমস্যার সমাধান মিলে। যেমন, টেনশন ও মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে, ঘুম
ভালো হয়, চুলের গোঁড়া শক্ত করতে সাহায্য করে, মাথার খুসকি দূর করে, মাথার
চুলকানি ও জ্বালাভাব কমায় এমনকি মাথা ঠাণ্ডা রাখে। তবে মেহেদি
ব্যাবহারে কিছু নিয়ম রয়েছে । নিচে তা আলোচনা করা হলোঃ-
৫ চামচ মেহেদি পাতা ২ চামচ টক দই ১ চামচ আমলকী গুড়া ১ চামচ নারিকেল
তেল। সব গুল উপকরণ এক সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে চুলের গোঁড়া থেকে আগা পর্যন্ত
ভাল করে লাগিয়ে নিতে হবে। ২-৩ ঘণ্টা রেখে হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে
নিতে হবে। সপ্তাহে ১ বার ব্যবহার করুন তবে মাথার অতিরিক্ত ঘাম বা মাথার তাপ
বেশি হলে সপ্তাহে ২ বার ব্যবহার করুন। চুল পড়া বন্ধ করতে মেহেদি জবা ও আমলকীর রেসিপি ভুমিকা অপরীসিম।
লাল জবার উপকারিতা
আমরা জানি সৌন্দর্যের প্রতীক মানেই ফুল। আর এই ফুল যদি হয় উপকারি
তাহলে তো আর কোন কথায় নাই।ঠিক এইরকমই একটি ফুল যার গুনাগুন অনেক সেটা হলো
লাল জবা। সুন্দর চুল প্রতিটা মেয়ের সপ্ন। চুল পরা বন্ধ করে , নতুন চুল
গজাতে সাহায্য করে, খুসকি দূর করে,মাথা ঠাণ্ডা রাখে, আরও অনেক গুন
সম্পূর্ণ এই লাল জবা।এছাড়াও জবাতে রয়েছে ভিটামিন-A, ভিটামিন-C, ভিটামিন- E,
ভিটামিন-B।
ভিটামিন-A চুলের গোঁড়া মজবুত করতে সাহায্য করে। নতুন চুল গজাতে
সাহায্য করে। ভিটামিন C চুলের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে। যা চুল
পড়া কমাই ও মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। ভিটামিন-E চুলের রুক্ষতা কমায়,
চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ায়, চুলের কোষ গঠনে সাহায্য করে। বিশেষ করে জবাতে
B1, B2, ও B3 রয়েছে । ভিটামিন-B চুলের বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করে ও চুলে পুষ্টি সরবরাহ করে।
জবা ব্যাবহার করার কিছু নিয়ম আলোচনা করা হল। ৭-৮ টি জবা ফুলের সাথে ৫-৬ টা
জবা পাতা,২ চামচ টক দই ভাল ভাবে পেস্ট বানিয়ে চুলের গোঁড়া থেকে আগা পর্যন্ত
লাগাতে হবে। ৪০-৪৫ মিনিট রাখার পর হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে
হবে। অথবা ১০-১২ টি জবা ফুল এর সাথে ১ কাপ নারিকেল তেল ভাল ভাবে ফুটিয়ে
নিতে হবে। তেল ঠাণ্ডা হলে ছেঁকে কাচের বতলে সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন।
সপ্তাহে ২-৩ দিন এই তেল মাথায় ভালভাবে ব্যাবহার করুন। ১ ঘণ্টা রাখার
পর শ্যাম্প করে নিতে হবে।
চুলের আগা ফাটাই জবার উপকারিতা
দৈনন্দিন জীবনে নানা ব্যস্ততার কারণে চুলের সঠিক যত্ন নিতে না পারাই
চুলের অনেক সমস্যা দেখা যায়, চুল রুক্ষ হয়ে যাওয়া, অতিরিক্ত চুল পড়া, চুল
ভেজ্ঞে যাওয়া ইত্যাদি। পর্যাপ্ত আদ্রতার অভাবে চুলের আগা ফাটা সমস্যা
দেখা যায়। চুল রুক্ষ হলে চুল পড়াও বেড়ে যায়। জবা ফুলে থাকা ভিটামিন, খনিজ
ও মিউসিলেজ জাতীয় উপাদান যা চুলের রুক্ষতা দূর করে চুলকে নরম ঝলমলে করে
তলে।
জবা ফুলের হেয়ার প্যাক বানিয়ে এটা ব্যবহার করতে পারবেন খুব সহজে। তার
জন্য যেটা করতে হবে সেটা হলো, প্রথমে ৭-৮ টি জবা ফুলের সাথে ৫-৬ টা জবা পাতা,২ চামচ টক দই, ১ চামচ মধু ভাল
ভাবে পেস্ট বানিয়ে চুলের গোঁড়া থেকে আগা পর্যন্ত লাগাতে হবে। ৪০-৪৫ মিনিট
রাখার পর হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
অথবা ১০-১২ টি জবা ফুল এর সাথে ১ কাপ নারিকেল তেল ভাল ভাবে ফুটিয়ে
নিতে হবে। তেল ঠাণ্ডা হলে ছেঁকে কাচের বতলে সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন।
সপ্তাহে ২-৩ বার এই তেল রাতে মাথায় ভালভাবে ব্যাবহার করুন এবং সকালে ধুয়ে
ফেলুন। আপনি চাইলে তেলের মধ্যে আমলকি, মেথি ব্যবহার করতে পারেন।
চুলের উজ্জ্বলতা বাড়াতে আমলকীর কার্যকারিতা
চুলের উজ্জ্বলতা বাড়াতে আমলকি অনেক কার্যকারি একটি উপাদান। আমলকিতে আছে ভিটামিন- সি ও অ্যান্টি- অক্সিডেন্ট, যা চুলকে ভেতর থেকে পুষ্টি যোগায় ও চুলের রুক্ষতা দূর করে।এছাড়াও আমলকি মাথারত্বকে জমে থাকা ময়লা,ধুলো, অতিরিক্ত তেল পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। চুল লম্বা করতে ও চুল ভাজ্ঞা কমাতে আমলকী ব্যাপক ভূমিকা পালন করে।
আমলকির হেয়ার প্যাক বানাতে যা লাগবেঃ ২ চামচ আমলকি গুড়া অথবা ৫-৬ টি টাটকা
আমলকী ( যদি টাটকা আমলকি ব্যবহার করতে চান তাহলে সেই আমলকি গুল ভাল করে
সিদ্ধ করে নিতে হবে) এর সাথে ১ চামচ মধু, ২ চামচ দই, অল্প পানি সব গুল
উপকরণ এক সাথে ভাল করে মিশিয়ে নিতা হবে। এরপর প্যাকটি চুলের গোড়া থেকে আগা
পর্যন্ত লাগাতে হবে। ৪০-৪৫ মিনিট রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
অথবা আপনি চাইলে আমলকির তেল ও ব্যবহার করতে পারেন। তার জন্য লাগবে- ১
কাপ নারকেল তেল এর সাথে ১ চামচ মেথি, ১০-১২ টা আমলকি টুকরো করে
ভালভাবে জাল করতে হবে। তেল যখন কালচে হয়ে যাবে তখন সেটাকে নামিয়ে ঠাণ্ডা
করে নিতে হবে। সপ্তাহে ২ দিন এই তেল ব্যবহার করতে হবে। এই তেল ভালোভাবে
চুলে দিয়ে ১-২ ঘণ্টা রাখে ধুয়ে ফেলতে হবে।
মাথার ত্বকের চুলকানি ও সংক্রমণ কমাতে আমলকীর ব্যাবহার
আমলকিতে রয়েছে প্রচুর পরিমান ভিটামিন- সি, অ্যান্টি- অক্সিডেন্ট,
অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান যা মাথার ত্বকের
চুলকানি ও ইনফেকশন রোধ করতে সাহায্য করে। সংক্রমণ কমাতে আমলকিতে রয়েছে
শক্তিশালী প্রাকৃতিক উপাদান। আমলকী ত্বকের পিএইচ ব্যালেন্স ঠিক রাখতে
সাহায্য করে।
আমলকী পেস্ট হিসাবে ব্যবহার করা যাই। ৩-৪ টি টাটকা আমলকী এর সাথে ১ চামচ
লেবুর রস, অল্প পানি এক সাথে ভাল করে পেস্ট বানাতে হবে। মাথার ত্বকে এটি
লাগিয়ে হালকা করে ম্যাসাজ করতে হবে। ৩০ মিনিট রেখে হালকা কুসুম গরম
পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। সপ্তাহে ২ বার ব্যবহার করতে হবে।
অথবা আপনি চাইলে আমলকির তেল ও ব্যবহার করতে পারেন। তার জন্য লাগবে- ১
কাপ নারকেল তেল এর সাথে ১ চামচ মেথি, ১০-১২ টা আমলকি টুকরো করে
ভালভাবে জাল করতে হবে। তেল যখন কালচে হয়ে যাবে তখন সেটাকে নামিয়ে ঠাণ্ডা
করে নিতে হবে। ১৫-২০ মিনিট এটি মাথায় লাগিয়ে ১ ঘণ্টা পর শ্যাম্প করে নিতে হবে। এই তেল ব্যাকটেরিয়া
ধংস করে।
লেখকের মন্তব্যঃ চুল পড়া বন্ধ করতে মেহেদি জবা ও আমলকী
ঘরোয়া পদ্ধতিতে কোন রকম কেমিক্যালের ব্যবহার ছাড়া প্রাকৃতিক কিছু
উপাদান ব্যবহার করে চুল পড়া বন্ধ করতে চাইলে আমাদের পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
মেহেদি, জবা ও আমলকি ব্যবহার করে কিভাবে চুল পড়া বন্ধ করবেন এবং প্রয়োজনীয়
পুষ্টি উপাদান সরবরাহের বিস্তারিত নিয়ম কানুন বর্ণনা করা হয়েছে। আমি আশা
করছি এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়লে চুল পড়া বন্ধের অনেক কার্যকরী
ট্রিক্স পেয়ে যাবেন। ধন্যবাদ ।


অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url